সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যা 2022 - প্রত্যন্ত গ্রামের বন্যার্তরা ত্রাণ পাচ্ছেন না /Sylhet-Sunamganj bonna/Top 10 Level
জেলা
সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যা
প্রত্যন্ত গ্রামের বন্যার্তরা ত্রাণ পাচ্ছেন না
শহরের বন্যা কবলিত নিম্ন আয়ের মানুষ ত্রাণ পাওয়ার চেয়েও বেশি কিছু করতে পারছে। তবে গ্রামের মানুষ স্বস্তি পাচ্ছেন কম।
সুমন কুমার দাস ওখলীল রহমান সিলেট ও সুনামগঞ্জ মো
প্রকাশিত: 23 জুন 2022, 09:21
বাড়িতে বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় সাজেদা বেগম তার পোষা ছাগল নিয়ে বাবার বাড়িতে যাচ্ছেন। প্রবল স্রোত ভেঙ্গে নিমজ্জিত রাস্তায় হাঁটছে সে। গতকাল সকালে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার আমতলী এলাকায় মো
বাড়িতে বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় সাজেদা বেগম তার পোষা ছাগল নিয়ে বাবার বাড়িতে যাচ্ছেন। প্রবল স্রোত ভেঙ্গে নিমজ্জিত রাস্তায় হাঁটছে সে। গতকাল সকালে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার আমতলী এলাকার ছবি: আব্দুল আজিজ
সিলেট ও সুনামগঞ্জের অনেক বন্যা কবলিত গ্রামে এখনো ত্রাণ পৌঁছায়নি। গ্রামের অনেক ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তাদের জীবন-জীবিকা বন্ধ হয়ে গেছে। যে খাবার জমা ছিল তা শেষ হয়ে গেছে। ফলে খাদ্য সংকটে ভুগছে প্রত্যন্ত গ্রামের বানভাসি মানুষ। তবে যাওয়া সহজ, বিশেষ করে শহরের অনেক এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা বেশি।
বিন্দুমাত্র ত্রাণ না পাওয়া গ্রামগুলোর একটি হলো সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বিশ্বনাথ ইউনিয়নের উত্তর ধর্মদা গ্রাম। বুধবার বিকেলে গ্রামে অন্তত একশ পরিবারে হাজার হাজার মানুষের বসবাস। এসব পরিবারের প্রায় অর্ধেকই দরিদ্র। এ গ্রামে এখনো হাঁটু পানি। তবে বন্যার্তদের জন্য সরকার কোনো ত্রাণ দেয়নি বলে জানা গেছে।
উত্তর ধর্মদা গ্রামের কৃষক শেখ মকবুল আলী (60), শেখ সৈয়দ আলী (62), শেখ তোরণ মিয়া (60), শুকুর আলী (33) এবং গ্রামের আরও 12 জন গতকাল সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। বন্যায় তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সরকারি-বেসরকারি কোনো ত্রাণ পাননি বলে জানান তারা।
উত্তর ধর্মদা গ্রামের মতো, বিশ্বনাথের বাওনপুর, ইলিমপুর, রামপুর, সাতসেন এবং তাজমহরামপুর গ্রামে কোনও সরকারি ত্রাণ পৌঁছেনি। সরেজমিনে এসব গ্রাম পরিদর্শন করে একাধিক বাসিন্দা জানান, ওই গ্রামে অনেক দরিদ্র পরিবারের বসবাস। বন্যায় বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। অনেকেই চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন। ফলে দরিদ্র পরিবারগুলোতে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট।
উত্তর ধর্মদাসহ এই গ্রামগুলো বিশ্বনাথ ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। ইউপি সদস্য আব্দুল মমিন বলেন, দুঃখ করে লাভ নেই কেন? যে সামান্য ত্রাণ এসেছে তা নিলে লাঠিসোঁটা নিয়ে লোকজনকে ছুটবো। মাত্র ২৫ প্যাকেট মুড়ি-চিড়া ও তিন বস্তা চাল পেয়েছি। সিরাজপুর গ্রামের ৬০টি পরিবারকে আড়াই কেজি করে এই চাল দেওয়া হয়েছে। প্যাকেটগুলো দেওয়া হয়েছে হিমিদপুর গ্রামে।'
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সিটি করপোরেশন ও জেলায় ৫৯৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১ লাখ ২৬ হাজার ৭৫৩ জন আশ্রয় নিয়েছেন। গতকাল পর্যন্ত বানভাসি মানুষের জন্য ১ হাজার ৩৯২ মেট্রিক টন চাল, ১৩ হাজার ২১৭ বস্তা শুকনো খাবার এবং নগদ ২৬ মিলিয়ন টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মুজিবুর রহমান প্রথম আলো</em>কে বলেন, "আজ (গতকাল) নতুন করে আরও ৮০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সিলেটের জন্য নতুন করে আরও ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছেন। তাই ত্রাণ নিয়ে জেলায় কোনো সংকট নেই। তবে গ্রাম পর্যায়ে বানভাসি মানুষের কাছে যাতে ত্রাণ পৌঁছে যায় তা নিশ্চিত করতে জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিলেটের মতো সুনামগঞ্জ পৌর শহরেও সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ কার্যক্রম বেশি রয়েছে। শুকনো এবং রান্না করা খাবার শহরের আশ্রয়কেন্দ্রে বিতরণ করা হচ্ছে। শহরের বন্যা কবলিত নিম্ন আয়ের মানুষ ত্রাণ পাওয়ার চেয়েও বেশি কিছু করতে পারছে। তবে গ্রামের মানুষ স্বস্তি পাচ্ছেন কম। সরকারি উদ্যোগ ছাড়াও বেসরকারি উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
বন্যার পানিতে ভেসে গেছে সুনামগঞ্জের মণিপুরী হাটি গ্রাম। বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। গ্রামে এমন কোনো বাড়ি নেই যা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। শুধু ঘরবাড়ি নয়। ভেঙে পড়েছে দোকানপাট ও গাছপালা। বাড়ির আঙিনা, রাস্তা গর্ত হয়ে গেছে। ঢালসহ যত্রতত্র বালির স্তূপ। যুদ্ধবিধ্বস্ত গ্রামের মতো। এখনো কোনো ত্রাণ পাননি অসহায় মানুষ।
সুনামগঞ্জ জেলা সদর থেকে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সালুকাবাদ ইউনিয়নের এ গ্রামে গতকাল বিকেলে নৌকায় করে মানুষের খাদ্য সংকটের কথা জানা যায়। এলাকার বর্তমান নদীর পশ্চিম তীরে মণিপুরী হাটি গ্রামটি অবস্থিত। উত্তর-দক্ষিণ উল্লম্ব এই গ্রামে প্রায় 130টি বাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে ৩২টি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। গ্রামের অধিকাংশ মানুষই দরিদ্র, g
শ্রমিক।
গ্রামের বাসিন্দা বাছির মিয়া (৫৬) পুরো গ্রাম ঘুরে দেখেন। এর সঙ্গে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া ৩২টি বাড়ির মালিকের তালিকাও হস্তান্তর করেন তিনি। গ্রামের মাঝখানে গিয়ে একটা মাটির ঘর দেখিয়ে আক্ষেপের সঙ্গে বললেন, এই পরিবারটা বড় অসহায়। তিনি বলেন, এটা শান্তনা বেগমের বাড়ি। পাশের আমেনা বেগমের বাড়িতে তাকে পাওয়া যায়। শান্তনা বেগম জানান, এখন তারা রাত কাটায়


.webp)